বেইমানদের ঈমান
যারা সত্যিকারে ঈমানদার তারা ইসলামকে গ্রহণের জন্য কখনও কোনও যুক্তি বা মওজেযা চায় না। কারন মহান আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল্লা তাদের অন্তর কে প্রসারিত করে দিয়েছেন যেন মুমিনরা আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল্লা কে অনুভব করতে পারে।
তাই তারা বিনা শর্তে, বিনা যুক্তি তে আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল্লা এর ওপর ঈমান আনে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হিসেবে আমরা সায়্যিদিনা সিদ্দিক-এ আকবর হযরত আবু বকর(রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু)এর কথা বলতে পারি। তিনি সারদার নুরনবি হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর কাছ থেকে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং তিনিই সবার আগে মিরাজ এর কথা বিনা দ্বিধায় বিশ্বাস করেছিলেন। এই হলও সত্যিকার মুমিনের উদাহরণ। আর যারা বেঈমান তারা আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল্লা এর নিদর্শন দেখার পরেও ঈমান আনে না। এর জন্য বেশ কিছু উদাহরণ দেওয়া যাবে। উদাহরণ হিসেবে যার কথা সবার আগে বলা যায় তিনি হলেন আবু জেহেল। এই লোক বহু নিদর্শন দেখার পরেও ঈমান আনেনি।এখানে আমি দুটি ঘটনা বর্ণনা করছি । ১ম ঘটনাঃএকবার আবু জেহেল তার হাতে কিছু পাথর লুকিয়ে পেয়ারে নবী(সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাস করেছিল,‘বল তো আমার হাতে কি আছে? ’প্রত্যুত্তরে নবী মুহাম্মাদ মুস্তাফা (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন “আমি বলব নাকি যাহা আছে তাহাই বলবে যে আপনার হাতে কি আছে?”তখন আবু জেহেল এর হাতে লুকানো পাথর গুলো আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল্লা এর পবিত্র কালেমা তাইয়্যাবা উচ্চারণ করছিলো। সুবাহানাল্লাহ আজ্জাওয়াজাল্লা। আর ২য় ঘটনাঃআবু জেহেল এর সামনে নবী (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আকাশের চাঁদ দ্বিখন্দ করে দেখায়। এই দুটি ঘটনার সাক্ষী হয়েও আবু জেহেল শেষ পর্যন্ত কিন্তু ইসলাম গ্রহণ করেনি,বরং পেয়ারে নবী (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জাদুকর বলে আখ্যায়িত করেছিল।আর আমাদের পূর্বের জাতি সামুদ দের কথা জানি। তাহাদের সামনে নবী সালেহ (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে মওজেযা দেখানোর পরেও সামুদ জাতিরা নাফরমানি করেছিলো। আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল্লা পবিত্র কুরআন মাজিদে অনেক বার বেঈমানদের সম্পর্কে বলেছেন যে তারা আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল্লা এর নিদর্শন দেখার পরেও বিশ্বাসঘাতকতা করবে। নিম্নে এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন মাজিদের আয়াত দেওয়া হলঃ ১<>আর আমি যদি তাহাদের নিকট ফিরিশতা নাজিল করিতাম এবং তাহাদের সহিত মরা মানুষ কথা কহিত আর আমি তাহাদের নিকট সমুদয় জিনিস একত্র করিতাম তথাপি তাহারা কখনও ঈমান আনিত না যদি আল্লাহ ইচ্ছা না করিতেন,কারন তাহাদের অধিকাংশই মূর্খ। (সূরাঃআনআম,আয়াতঃ১১১)। ২<>নিশ্চয় তোমাদের প্রভুর তরফ হইতে বহু প্রমাণ আসিয়াছে,অতএব যে লক্ষ্য করিবে,সে নিজের জন্যই করিবে,আর যে ব্যক্তি অন্ধ থাকিবে,সে নিজের বিরুদ্ধেই থাকিবে।বল,‘আমি তোমাদের রক্ষাকর্তা নহি’। (সূরাঃআনআম,আয়াতঃ১০৫)। ৩<>এবং তাহারা কঠিন কসম করিয়াছিল যে,যদি তাহাদের নিকট আল্লাহর কোন নিদর্শন উপস্থিত হয় তবে অবশ্যই তাহারা ঈমান তৎপ্রতি ঈমান আনিবে।বল,‘দলিল সকল কেবলমাত্র আল্লাহর নিকট আছে এবং কিসে তোমাদিগকে জানাইয়া দিবে যে,যখন নিদর্শন সকল উপস্থিত হইবে,তাহারা ঈমান আনিবে না’। (সূরাঃআনআম,আয়াতঃ১০৯)। ৪<>এবং যেরূপ প্রথম বার তাহারা কুরআন এর প্রতি ঈমান আনে নাই,আমিও সেই রূপে তাহাদের অন্তর ও তাহাদের চোখকে হতভম্ব করিয়া দিব এবং তাহদিগকে নিজেদের অবাধ্যতায় ঘুরিয়া বেড়াইতে ছাড়িয়া দিব। (সূরাঃআনআম,আয়াতঃ১১০)। ৫<>এবং তাহাদের কেহ কেহ এমন আছে যাহারা ভান করে যে,তোমার কথার প্রতি কান দেয় কিন্তু আমি তাহাদের মনের উপর পর্দা(আবরণ)স্থাপন করিয়াছি জেন তাহারা বুঝিতে না পারে এবং তাহাদের কানের মধ্যে বোঝা আছে আর যদিও তাহারা সমুদয় নিদর্শন দেখিতে পায় তথাপি তৎপ্রতি ঈমান আনিবে না,এমন কি তাহারা তোমার নিকট উপস্থিত হয় ,তাহারা তোমার সহিত ঝগড়া করে,তাহাদের দলের কাফির লকেরা বলে ইহা তো প্রাচীনকালের আজগুবিকাহিনী। (সূরাঃআনআম,আয়াতঃ২৫)। এরকম আর অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে পবিত্র কুরআন মাজিদে যেখানে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা নাফরমানদের সম্পর্কে বলেছেন।তবে যখন কোনও কাফির বা অবিশ্বাসকারি নিদর্শন দেখতে চাইবে সেই সম্পর্কে আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল্লা পবিত্র কুরআন মাজিদে ঘোষণা করেছেন যে “বল,‘তোমরা অপেক্ষা করিয়া থাক,আমরাও অবশ্যই অপেক্ষা করিতেছি’। (সুরাঃআরাফ,আয়াতঃ১৫৯) তাহলে আমরা দেখলাম যে নাফরমানদের চরিত্র।হয়তো আপানর আশেপাশে এরকম অনেক নাফরমান আছে।তার আজে বিধর্মী হবে এমন কোনও কথা নেই।তারা মুসলমানের সন্তান হয়েও নাফরমানি করতে পারে।কিন্তু আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল্লাআমাদেরকে বিবেক বুদ্ধি দিয়েছেন জেন আমরা সত্য মিথ্যার বিবেচনা করতে পারি।যাই হোক ইনশাআল্লাহ আজ্জাওয়াজাল্লা আমারা আল্লাহ এর দয়ায় সঠিক পথ খুঁজে পাবো এবং নাফরমানদের অন্তর্ভুক্ত হব না।আল্লাহ জেন আমাদের কে ইমান এর সহিত মৃত্যু দান করেন, আমিন। (মিনহাজ আত্তারি) |