অনাদি ও অনন্ত স্বত্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যখন একা ও অপ্রকাশিত ছিলেন, তখন তাঁর আত্মপ্রকাশের সাধ ও ইচ্ছা জাগরিত হলো। তখন তিনি একক সৃষ্টি হিসাবে নবী করীম রাউফুর রাহিম নূরে মোজ্জাস্সাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নূর মোবারক পয়দা করলেন। কোরআন ও হাদীস শরীফের আলোকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের তৈরি এর দলিলসমূহ অনুবাদসহ বিজ্ঞ পাঠকের সামনে তুলে ধরার প্রয়াস পাচ্ছি।
কোরআন শরীফের আলোকে :
আল্লাহ তায়া’লা ইরশাদ করেন-قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين-
অর্থঃ নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা নূর এবং স্পষ্ট কিতাব এসেছে।। (সূরা মায়িদা আয়াত- ১৫)
আলোচ্য আয়াতে নূর দ্বারা নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বুঝানো হয়েছে। নিম্নে আরো কয়েকটি প্রসিন্ধ তাফসীরের আলোকে দলিল উপস্থাপন করা হল :-
বিশ্ব বিখ্যাত মুফাসসিরে কোরআন হযরত ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) এর বিশ্ব বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ইবনে আব্বাস এর মধ্যে আছে-
قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعني محمدا صلي الله عليه ؤسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন। (তাফসীরে ইবনে আব্বাস পৃষ্ঠা ৭২)।
ইমাম আবু জাফর মুহাম্মদ ইবনে জারীর আত্-তবারী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) তাঁর বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ইবনে জারীর এর মধ্যে বলেন-
قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعني بالنؤر محمدا صلي الله عليه ؤسلم الذي انار الله به الحق واظهربه الاسلام ومحق به الشرك-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন, যে নূর দ্বারা আল্লাহ সত্যকে উজ্জ্বল ও ইসলামকে প্রকাশ করেছেন এবং শিরিককে
নিশ্চিহ্ন করেছেন। ( তাফসীরে ইবনে জারীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৮৬, সূরা মায়িদা আয়াত ১৫)।
্থ ফাযিল স্নাতক ২য় বর্ষ, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদরাসা।
মুহীউস্সুন্নাহ আল্লামা আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহাম্মদ (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) (যিনি ‘খাজিন’ নামে পরিচিত) তাফসীরে খাজেনের মধ্যে বলেন-
قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعنى باالنور محمدا صلي الله عليه وسلم انما سماه الله نور لانه يهدى بالنور في الظلام-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন। আল্লাহ তায়া’লা তাঁর নামকরণ করেছেন নূর, কারণ তাঁর নূরেতে হেদায়ত লাভ করা যায়। যেভাবে অন্ধকারে নূর দ্বারা পথ পাওয়া যায়। (তাফসীরে খাজিন ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪১৭)।
ইমাম হাফেজ উদ্দীন আবুল বারাকাত আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ আন- নাসাফী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) এই আয়াত শরীফ ( قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين) প্রসঙ্গে বলেন-
والنور محمد عليه والسلام لانه يهتدي به كما سمي سراجا منيرا-
আর নূর হলেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কেননা তাঁর নূরেতে হেদায়ত লাভ করা যায়, যেমন তাঁকে উজ্জ্বল প্রদীপ বলা হয়েছে। (তাফসীরে মাদারিক ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪১৭)।
ইমামুল মুতাকাল্লেমীন আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) এই আয়াত শরীফ (قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين) প্রসঙ্গে বলেন-ان المراد بالنور محمد صلي الله عليه و سلم وبالكتاب القران-
অর্থঃ নিশ্চয়ই নূর দ্বারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং কিতাব দ্বারা আল কোরআন মজীদকে বুঝানো হয়েছে। (তাফসীরে কবীর ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯৫, সূরা মায়িদা আয়াত ১৫)।
আর যারা বলে যে ‘নূর ও কিতাবে মুবীন’ দ্বারা কুরআন মজীদকেই বুঝানো হয়েছে, ইমাম রাযী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) সে সম্পর্কে বলেন-هذا ضعيف لان العطف يوجب المغايرة بين المعطوف والمعطوف عليه
এই অভিমত দুর্বল, কারণ আতফ (ব্যাকরণগত সংযোজিত) মা’তুফ (সংযোজিত) ও মা’তুফ আলাইহি (যা তার সাথে সংযোজন কারা হয়েছে ) এর মধ্যে ভিন্নতা প্রমাণ করে। (তাফসীরে কবীর ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯৫)।
ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলেনঃ قد جاءكم من الله نور هو النبى صلي الله عليه وسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর এসেছে, তা হল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নূর মোবারক। (তাফসীরে জালালাইন শরীফ পৃষ্ঠা ৯৭)
আল্লামা মাহমূদ আলূসী বাগদাদী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলেন-
قد جاءكم من الله نور عظيم هو نور الانوارالنبى المختار صلى الله عليه وسلم الى ذهب قتادة والزجاج-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে মহান নূর এসেছে। আর তিনি হলেন নূরুল আনোয়ার নবী মোখতার সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এটাই হযরত কাতাদাহ ও যুজাজের অভিমত। (তাফসীরে রুহুল মাআনী ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৯৭)।
আল্লামা ইসমাঈল হক্কী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলেন-
قيل المراد باالاول هو الرسول صلى الله عليه وسلم وبالثانى القران-
অর্থঃ বলা হয়েছে যে, প্রথমটা অর্থাৎ নূর দ্বারা রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বুঝানো হয়েছে এবং দ্বিতীয়টা অর্থাৎ কিতাবে মুবীন দ্বারা কুরআন কে বুঝানো হয়েছে। (তাফসীরে রুহুল বয়ান ২খন্ড, পৃষ্ঠা ২৬৯)
আর অগ্রসর হয়ে বলেন-
سمى الرسول نورا لان اول شيئ اظهره الحق بنور قدرته من ظلمة العدم كان نور محمد صلي الله عليه و سلم كما قال اول ما خلق الله نورى-
অর্থ: আল্লাহ তায়া’লা রসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম রেখেছেন নূর। কেননা আল্লাহ তায়া’লা তাঁর কুদরতের নূর থেকে সর্বপ্রথম যা প্রকাশ করেছেন তা তো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নূর মোবারক। যেমন তিনি ফরমায়েছেন- আল্লাহ তায়া’লা সর্বপ্রথম আমার নূর মোবারক কে সৃষ্টি করেছেন। (তাফসীরে রুহুল বয়ান ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৬৯)।
ইমাম মুহীউস সুন্নাহ আবু মুহাম্মদ আল- হোসাইন আল-ফাররা আল-বাগাভী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলেন-
قد جاءكم من الله نور يعنى باالنور محمدا صلي الله عليه وسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন। (তাফসীরে মাআলিমুত তান্যীল, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ২৩, তাফসীরে খাযিনের পাদ টীকা)
এ ছাড়া আরো অনেক তাফসীর গ্র্েরন্থর মধ্যে আছে যে প্রিয় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের তৈরি তা নিম্নরূপ :-
সুরা মায়েদা পারা ৬, ১৫ নং আয়াতে নূরের ব্যাখ্যাঃ-
তাফসীরে মারেফুল কোরআন পৃষ্ঠা ৫৪।
তাফসীরে আবি সউদ ২য় খন্ড, পৃ- ২৫১,
তাফসীরে রুহুল বয়ান ২য় খন্ড, পৃ- ৩৬৯,
তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১ম খন্ড, পৃ- ৩৬০, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৯৭,
তাফসীরে ইবনে জারীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ- ৮৬,
তাফসীরে কবীর ১১তম খন্ড, পৃ- ১৬৩,
তাফসীরে কুরতুবী ৬ষ্ঠ খন্ড পৃ- ১১৮,
তাফসীরে বায়জাভী ১ম খন্ড, পৃ- ৬৪,
তাফসীরে মাজহারী ৩য় খন্ড, পৃ- ৬৮,
তাফসীরে কবীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ- ৪৬২,
ছফওয়াতুত তাফাসীর ২য় খন্ড, পৃ- ১৪০,
তাফসীরে দুররে মানসুর ২য় খন্ড, পৃ- ১৮৭, তাফসীরে নূরুল কোরআন ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ১৬১, তাফসীরে নঈমী ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ২৯৫।
সূরা তাওবা পারা ১০, ৩২ নং আয়াতে নূরের ব্যাখ্যাঃ-
তাফসীরে দুররে মানসুর ৩ খন্ড, পৃ- ২০১,
তাফসীরে কবীর ১৬ম খন্ড, পৃ- ৩৪, ৩।
তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১৪ম খন্ড, পৃ- ৪৮।
সুরা নূর পারা ১৮, আয়াত নং ৩৫:-v
তাফসীরে ইবনে আব্বাস ৪র্থ খন্ড, পৃ- ২৪, ২।
তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১০ম খন্ড, পৃ- ১৬৬।
সুরা আহযাব আয়াত নং ৪৬:-v
তাফসীরে আহকামুল কোরআন লিল ইবনুল আরাবী ৩য় খন্ড, পৃ- ১৫৪৬, ২।
তাফসীরে মাওয়ারদী ৪র্থ খন্ড, পৃ- ৪১১।
প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শানে না’ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিবেশনকারী অন্যতম সাহাবী হযরত ক’ব
বিন যোহাইর (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) তাঁর নিম্নোক্ত কাসিদার মধ্যে প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে নূরের নবী বলে সম্বোধন করেছেন-ان الرسول لنوريستضاء به مهند من سيوف الله مسلول-
অর্থ : নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূর, যা দ্বারা আলোকিত হওয়া যায়। তিনি আল্লাহর তরবারি সমূহের মাঝে ধারালো উজ্জ্বল তরবারি। (কাসিদা- ই- কা’ব বিন যোহাইর (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু), মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক আলিম শ্রেণির সিলেবাসের অন্তরভুক্ত আরবী সাহিত্য বইয়ের ১৪৮ পৃষ্ঠা)
হাদীস শরীফের আলোকে :
عن جابر بن عبد الله رضى الله عنه قال : قلت يا رسول الله بابى انت وامى اخبرنى عن اول شئ خلق الله تعالى قبل الاشياء ؟ قال يا جابر ان الله تعالى قد خلق قبل الاشياء نورنبيك من نوره فجعل ذالك النور يدور بالقدرة حيث شاء الله تعالى ولم يكن في ذالك الوقت لوح ولا قلم ولا جنة ولا ملك ولا سماء ولا ارض ولا شمس ولا قمر ولا جن ولا انس – فلما اراد الله تعالى ان يخلق الخلق قسم ذالك النور اربعة اجزاء فخلق من الجزء الاول القلم و من الثاني اللوح ومن الثالث العرش ثم قسم الجزء الربع اربعة اجزاء فخلق من الاول حملة العرش ومن الثانى الكرسى ومن الثالث باقى الملائكة ثم قسم الربع اربع اجزاء فخلق من الاول السماوات ومن الثانى الارضين ومن الثالث الجنة والنار————————————— الخ-
অর্থ : হযরত জাবের (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবেদন করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার মা-বাবা আপনার কদম মোবারকে উৎসর্গিত, আপনি দয়া করে বলুন, সকল বস্তুর পূর্বে সর্বপ্রথম আল্লাহ তায়া’লা কোন বস্তুটি সৃষ্টি করেছিলেন? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়’লা সমস্ত কিছুর পূর্বে তোমার নবীর (তোমার) নূর মোবারক তাঁরই নূর মোবারক হতে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর ওই নূর আল্লাহ তায়’লারই মর্জি মুতাবেক তাঁরই কুদরতি শক্তিতে পরিভ্রমণ করতে লাগল। ওই সময় না ছিল বেহেশ্ত-দোযখ, আর ছিলনা আসমান-যমীন, চন্দ্র-সূর্য, মানব ও দানব। এক পর্যায়ে মহান আল্লাহ যখন সৃষ্টিজগত পয়দা করার মনস্থ করেছিলেন, প্রথমেই ওই নূর মোবারককে চারভাগে বিভক্ত করে প্রথম অংশ দিয়ে কলম, দ্বিতীয় অংশ দিয়ে লওহ, তৃতীয় অংশ দিয়ে আরশ, সৃষ্টি করে চুতুর্থাংশকে পুণরায় চারভাগে বিভক্ত করে প্রথমাংশ দিয়ে আরশবহনকারী ফেরেশতাদের দ্বিতীয় অংশ দ্বারা কুরসী, তৃতীয় অংশ দ্বারা অন্যান্য ফেরেশতাদের সৃষ্টি করে চুতুর্থাংশকে আবারও চারভাগে বিভক্ত করে প্রথম ভাগ দিয়ে সপ্ত আসমান, দ্বিতীয় ভাগ দিয়ে সপ্ত যমীন, তৃতীয় ভাগ দিয়ে বেহেশত-দোযখ এবং পরবর্তী ভাগ দিয়ে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সকল বস্তু সৃষ্টি করে। (আল মাওয়াহিবুল লাদুনিয়া ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৭১)।
عن كعب الخبار رضى الله عنه قال : لما الله ان يخلق المخلوقات بسط الارض وقع السماء وقبض قبضة من نوره و قال لها كونى محمدا فصارت عمودا من نوره فعلا حتى انتهى الى حجب العظمة فسجد و قال فى سجوده الحمد لله فقال الله سبحانه و تعالى لهذا خلقتك و سميتك محمد صلى الله عليه و سلم منك ابدا الخلق و بك اختم الرسل-
অর্থ : হযরত কাব আহবার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন যখন সৃষ্টি জগত সৃজন করার ইচ্ছা করলেন তখন মাটিকে সস্প্রসারিত করলেন, আকাশকে উঁচু করলেন এবং আপন নূও হতে এক মুষ্ঠি নূর গ্রহন করলেন। তারপর উক্ত নূরকে নির্দেশ দিলেন’ তুমি মুহাম্ম্দ হয়ে যাও।’ অতএব সে নূও স্তম্ভের ন্যায় উপরের দিকে উঠতে থাকল এবং মহত্বের পর্দা পর্যন্ত পৈাছে সিজদায় পরে বলল,’আলহামদুলিল্লাহ্’ তখন আল্লাহ্ পাকের পক্ষ থেকে ইরশাদ হল,এজন্যই তোমাকে সৃষ্টি করেছি আর তোমার নাম মুহাম্ম্দ রেখেছি। তোমার হতেই সৃষ্টি কাজ শুরু করব এবং তোমাতেই রিসালাতের ধারা সমাপ্ত করব। (সিরাতুল হালাভিয়া ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৫০)।
عن عائشة رضي الله عنها قالت : كنت في الشجر ثوبا لرسول الله صلي عليه و سلم فانطفا المصباح و سقطت الابرة من يدي فدخل علي رسول الله صلي الله عليه و سلم فاضاء من نور و جهه فجدت الابرة-
অর্থ : “হযরত আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি রাত্রে বাতির আলোতে বসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাপড় মোবারক সেলাই করেছিলাম। এমন সময় প্রদীপটি (কোন কারণে) নিভে গেল এবং আমি সুচটি হারিয়ে ফেললাম। এরপরই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্ধকার ঘরে প্রবেশ করলেন। তাঁর চেহারা মোবারকের নূরের জ্যোতিতে আমার অন্ধকার ঘর আলোময় হয়ে গেল এবং আমি (ঐ আলোতেই) আমার হারানো সুচটি খুজে পেলাম”। (ইমাম ইবনে হায়তামী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) এর আন-নে’মাতুল কোবরা আলার আলম গ্রন্থে ৪১ পৃষ্ঠা)।
اخرج ابن ابي عمر العدني فى مسنده عن ابن عباس ان قريشا كانت نورا بين يدي الله تعالى قبل ان يخلق ادم بالفى عام يسبح ذالك النور و تسبح الملائكة بتسيحه فلما خلق الله ادم القي ذالك النور فى صلب قال رسول الله صل اله عليه و سلم فاهبطنى الله الى الارض فى صلب ادم (عليه السلام) و جعلنى فى صلب نوح عليه السلام و ق ف بى فى صلب ابرهيم عليه السلام ثم لم يزل الله ينقلبى من الصلاب الكريمة و الارحام الطاهؤة حتى اخرجنى من بين ابوى لم يلتقيا على سفاح قط-
অর্থ : হযরত ইবনে আলী ওমর আল-আদানী স্বীয় মুসনাদে হযরত ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণনা করেন, হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন, তখন তাঁকে তাঁর সন্তানদের পরস্পরের মধ্যে মর্যাদার তারতম্যটুকুও দেখাতে লাগলেন। তিনি ( আদম আলাইহিস সালাম ) তাদের মধ্যে শেষপ্রান্তে একটা উজ্জ্বল নূর দেখাতে পেলেন। তখন তিনি বললেন,” হে রব! ইনি কে? ( যাকে সবার মধ্যে প্রজ্জ্বলিত নূর হিসাবে দেখতে পাচ্ছি?) উত্তরে মহান রব্বুল আলামীন ইরশাদ করলেন,” ইনি হলেন তোমার পুত্র-সন্তান হযরত আহমদ মুজ্তবা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি প্রথম, তিনি শেষ, তিনি হবেন আমার দরবারে প্রথম সুপারিশকারী (ক্বিয়ামতের দিনে)। ( আল-খাসাইসুল কুবরা ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯)
ইমাম হাফেজ আবুল ফযল ক্বাযী আয়ায (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলেন-
و قد سماه الله تعالى فى و سراجا منيرا فقال تعالي قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين و قال تعالى انا ارسلناك شاهدا و مبشيرا و نذيرا و داعيا الى الله باذنه و سراجا منيرا و قال فى غير هذا الموضع انه كان لاظل لشخصه في شمس و لا قمر لانه كان نورا الذباب كان لا يقع على جسده و لا ثيابه-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়া’লা কোরআন করীমে তাঁর নাম রেখেছেন নূর ও সিরাজুম্ মুনীর। যেমন তিনি ফরমায়েছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর ও স্পষ্ট কিতাব এসেছে। আরো ফরমায়াছেন, আমি তো আপনাকে পাঠিয়েছি হাজের ও নাজেররূপে, আল্লাহর অনুমক্রিমে তাঁর দিকে আহবানকারীরূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপ (সিরাজুম মুনীর ) রূপে। নিশ্চয়ই তাঁর ছায়া ছিল না. না সূর্য়ালোকে না চন্দ্রালোকে কারণ তিনি ছিলেন নূর। তাঁর শরীল ও পোশাক মোবারকে মাছি বসত না। (শিফা শরীফ ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ২৪২)।
وعن ابلى هريرة رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه و سلم سائل جبريل عليه السلام فقال يا جبريل كم عمرك من السنين فقال يا رسول الله مست اعلم غير ان فى الحجاب الرابع نجما يطلع في سبعين الف سنة مرة رايته اثنين و سبعين الف مرة فقال يا جبريل و عزة ربى جل جلا له انا ذالك الكوب-
অর্থ : হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা জিব্রাঈল আলায়হিস সালামকে জিজ্ঞেসা করলেন, ওহে জিব্রাঈল! তোমার বয়স কত? উত্তরে জিব্রাঈল বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো সঠিক জানি না। তবে এতটুকু বলতে পারি ( সৃষ্টি জগত সৃষ্টির পূর্বে) আল্লাহ তায়’লা নূরানী আযমতের পর্দা সমূহের চতুর্খ পর্দায় একটি নূরানী তারকা সত্তর হাজার বছর পরপর উদিত হত। আমি আমার জীবনে সেই নূরানী তারকা বাহাত্তর হাজার বার উদিত হতে দেখেছি। অতঃপর নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম ইরশাদ করলেন মহান রাব্বুল আলামীনের ইজ্জতের কসম করে বলছি, সেই অত্যুজ্জ্বল নূরানী তারকা আমিই ছিলাম। (সীরাতে হালাভীয়া পৃষ্ঠা ৪৯, তাফসীরে রুহুল বয়ান পৃষ্ঠা ৫৪৩)
لم يكن له صلى الله عليه و سلم ظل في شمس و لا قمر لانه كان نورا-
অর্থ : “সূর্য চন্দ্রের আলোতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দেহ মোবারকের ছায়া পড়তোনা। কেননা, তিনি ছিলেন আপদমস্তক নূর”। (যুরকানী শরীফ ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ২২০)।
এ ছাড়া আরো অনেক হাদীস শরীফ গ্র্েরন্থর মধ্যে আছে যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের তৈরি তা নিম্নরূপ :-
১। মিশকাত শরীফ পৃষ্ঠা ৫১৩, ২৪ এর ১০নং হাশিয়া, ৫১১ এর ৬নং হাশিয়া, তিরমিজি শরীফ ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৭, মাওয়াহিবে লাদুনিয়া পৃষ্ঠা ৪৫,শরহে সুন্নাহ ১০ম খন্ড, পৃষ্ঠা ২০৭, মিরকাত ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ১৪৬,১৬৬,১৯৪।
তিরমিজি শরীফ ২য় খন্ড, প- ৩৭, মাজমুওয়ায়ে ফাতাওয়ার ২য় খন্ড, পৃ- ২৮৬, ১৮।
নশরুততীব পৃ- ৫, কৃতঃ আশরাফ আলী থানবী, ১৯।
এমদাদুছ ছুলূক পৃষ্ঠা ২০১, কৃতঃ রশিদ আহমেদ গাংগুহী। ২০।
শুকরে নিয়ামত কৃতঃ কাসেম নানুতুবী, গাওহারে সিরাজী পৃষ্ঠা ৬৯, কৃত : সিরাজুল ইসলাম।
হে আল্লাহ ! তুমি সকলকে হুববে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও দীদারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নসীব করো। ওয়া সাল্লাল্লাহু আলা খাইরি খালাক্বহী ওয়া নূরে যাতিহী ওয়া জীনাতি ফারশিহী সাইয়েদিনা ওয়া মাওলানা মোহাম্মদিও ওয়া আলা আলিহী ওয়া আসহাবিহী আজমাঈন। আমীন
কোরআন শরীফের আলোকে :
আল্লাহ তায়া’লা ইরশাদ করেন-قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين-
অর্থঃ নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা নূর এবং স্পষ্ট কিতাব এসেছে।। (সূরা মায়িদা আয়াত- ১৫)
আলোচ্য আয়াতে নূর দ্বারা নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বুঝানো হয়েছে। নিম্নে আরো কয়েকটি প্রসিন্ধ তাফসীরের আলোকে দলিল উপস্থাপন করা হল :-
বিশ্ব বিখ্যাত মুফাসসিরে কোরআন হযরত ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) এর বিশ্ব বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ইবনে আব্বাস এর মধ্যে আছে-
قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعني محمدا صلي الله عليه ؤسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন। (তাফসীরে ইবনে আব্বাস পৃষ্ঠা ৭২)।
ইমাম আবু জাফর মুহাম্মদ ইবনে জারীর আত্-তবারী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) তাঁর বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ইবনে জারীর এর মধ্যে বলেন-
قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعني بالنؤر محمدا صلي الله عليه ؤسلم الذي انار الله به الحق واظهربه الاسلام ومحق به الشرك-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন, যে নূর দ্বারা আল্লাহ সত্যকে উজ্জ্বল ও ইসলামকে প্রকাশ করেছেন এবং শিরিককে
নিশ্চিহ্ন করেছেন। ( তাফসীরে ইবনে জারীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৮৬, সূরা মায়িদা আয়াত ১৫)।
্থ ফাযিল স্নাতক ২য় বর্ষ, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদরাসা।
মুহীউস্সুন্নাহ আল্লামা আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহাম্মদ (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) (যিনি ‘খাজিন’ নামে পরিচিত) তাফসীরে খাজেনের মধ্যে বলেন-
قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين يعنى باالنور محمدا صلي الله عليه وسلم انما سماه الله نور لانه يهدى بالنور في الظلام-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন। আল্লাহ তায়া’লা তাঁর নামকরণ করেছেন নূর, কারণ তাঁর নূরেতে হেদায়ত লাভ করা যায়। যেভাবে অন্ধকারে নূর দ্বারা পথ পাওয়া যায়। (তাফসীরে খাজিন ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪১৭)।
ইমাম হাফেজ উদ্দীন আবুল বারাকাত আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ আন- নাসাফী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) এই আয়াত শরীফ ( قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين) প্রসঙ্গে বলেন-
والنور محمد عليه والسلام لانه يهتدي به كما سمي سراجا منيرا-
আর নূর হলেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কেননা তাঁর নূরেতে হেদায়ত লাভ করা যায়, যেমন তাঁকে উজ্জ্বল প্রদীপ বলা হয়েছে। (তাফসীরে মাদারিক ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪১৭)।
ইমামুল মুতাকাল্লেমীন আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) এই আয়াত শরীফ (قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين) প্রসঙ্গে বলেন-ان المراد بالنور محمد صلي الله عليه و سلم وبالكتاب القران-
অর্থঃ নিশ্চয়ই নূর দ্বারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং কিতাব দ্বারা আল কোরআন মজীদকে বুঝানো হয়েছে। (তাফসীরে কবীর ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯৫, সূরা মায়িদা আয়াত ১৫)।
আর যারা বলে যে ‘নূর ও কিতাবে মুবীন’ দ্বারা কুরআন মজীদকেই বুঝানো হয়েছে, ইমাম রাযী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) সে সম্পর্কে বলেন-هذا ضعيف لان العطف يوجب المغايرة بين المعطوف والمعطوف عليه
এই অভিমত দুর্বল, কারণ আতফ (ব্যাকরণগত সংযোজিত) মা’তুফ (সংযোজিত) ও মা’তুফ আলাইহি (যা তার সাথে সংযোজন কারা হয়েছে ) এর মধ্যে ভিন্নতা প্রমাণ করে। (তাফসীরে কবীর ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯৫)।
ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলেনঃ قد جاءكم من الله نور هو النبى صلي الله عليه وسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর এসেছে, তা হল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নূর মোবারক। (তাফসীরে জালালাইন শরীফ পৃষ্ঠা ৯৭)
আল্লামা মাহমূদ আলূসী বাগদাদী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলেন-
قد جاءكم من الله نور عظيم هو نور الانوارالنبى المختار صلى الله عليه وسلم الى ذهب قتادة والزجاج-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে মহান নূর এসেছে। আর তিনি হলেন নূরুল আনোয়ার নবী মোখতার সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এটাই হযরত কাতাদাহ ও যুজাজের অভিমত। (তাফসীরে রুহুল মাআনী ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৯৭)।
আল্লামা ইসমাঈল হক্কী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলেন-
قيل المراد باالاول هو الرسول صلى الله عليه وسلم وبالثانى القران-
অর্থঃ বলা হয়েছে যে, প্রথমটা অর্থাৎ নূর দ্বারা রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বুঝানো হয়েছে এবং দ্বিতীয়টা অর্থাৎ কিতাবে মুবীন দ্বারা কুরআন কে বুঝানো হয়েছে। (তাফসীরে রুহুল বয়ান ২খন্ড, পৃষ্ঠা ২৬৯)
আর অগ্রসর হয়ে বলেন-
سمى الرسول نورا لان اول شيئ اظهره الحق بنور قدرته من ظلمة العدم كان نور محمد صلي الله عليه و سلم كما قال اول ما خلق الله نورى-
অর্থ: আল্লাহ তায়া’লা রসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম রেখেছেন নূর। কেননা আল্লাহ তায়া’লা তাঁর কুদরতের নূর থেকে সর্বপ্রথম যা প্রকাশ করেছেন তা তো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নূর মোবারক। যেমন তিনি ফরমায়েছেন- আল্লাহ তায়া’লা সর্বপ্রথম আমার নূর মোবারক কে সৃষ্টি করেছেন। (তাফসীরে রুহুল বয়ান ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৬৯)।
ইমাম মুহীউস সুন্নাহ আবু মুহাম্মদ আল- হোসাইন আল-ফাররা আল-বাগাভী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলেন-
قد جاءكم من الله نور يعنى باالنور محمدا صلي الله عليه وسلم-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন। (তাফসীরে মাআলিমুত তান্যীল, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ২৩, তাফসীরে খাযিনের পাদ টীকা)
এ ছাড়া আরো অনেক তাফসীর গ্র্েরন্থর মধ্যে আছে যে প্রিয় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের তৈরি তা নিম্নরূপ :-
সুরা মায়েদা পারা ৬, ১৫ নং আয়াতে নূরের ব্যাখ্যাঃ-
তাফসীরে মারেফুল কোরআন পৃষ্ঠা ৫৪।
তাফসীরে আবি সউদ ২য় খন্ড, পৃ- ২৫১,
তাফসীরে রুহুল বয়ান ২য় খন্ড, পৃ- ৩৬৯,
তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১ম খন্ড, পৃ- ৩৬০, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ৯৭,
তাফসীরে ইবনে জারীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ- ৮৬,
তাফসীরে কবীর ১১তম খন্ড, পৃ- ১৬৩,
তাফসীরে কুরতুবী ৬ষ্ঠ খন্ড পৃ- ১১৮,
তাফসীরে বায়জাভী ১ম খন্ড, পৃ- ৬৪,
তাফসীরে মাজহারী ৩য় খন্ড, পৃ- ৬৮,
তাফসীরে কবীর ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ- ৪৬২,
ছফওয়াতুত তাফাসীর ২য় খন্ড, পৃ- ১৪০,
তাফসীরে দুররে মানসুর ২য় খন্ড, পৃ- ১৮৭, তাফসীরে নূরুল কোরআন ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ১৬১, তাফসীরে নঈমী ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা ২৯৫।
সূরা তাওবা পারা ১০, ৩২ নং আয়াতে নূরের ব্যাখ্যাঃ-
তাফসীরে দুররে মানসুর ৩ খন্ড, পৃ- ২০১,
তাফসীরে কবীর ১৬ম খন্ড, পৃ- ৩৪, ৩।
তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১৪ম খন্ড, পৃ- ৪৮।
সুরা নূর পারা ১৮, আয়াত নং ৩৫:-v
তাফসীরে ইবনে আব্বাস ৪র্থ খন্ড, পৃ- ২৪, ২।
তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১০ম খন্ড, পৃ- ১৬৬।
সুরা আহযাব আয়াত নং ৪৬:-v
তাফসীরে আহকামুল কোরআন লিল ইবনুল আরাবী ৩য় খন্ড, পৃ- ১৫৪৬, ২।
তাফসীরে মাওয়ারদী ৪র্থ খন্ড, পৃ- ৪১১।
প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শানে না’ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিবেশনকারী অন্যতম সাহাবী হযরত ক’ব
বিন যোহাইর (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) তাঁর নিম্নোক্ত কাসিদার মধ্যে প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে নূরের নবী বলে সম্বোধন করেছেন-ان الرسول لنوريستضاء به مهند من سيوف الله مسلول-
অর্থ : নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূর, যা দ্বারা আলোকিত হওয়া যায়। তিনি আল্লাহর তরবারি সমূহের মাঝে ধারালো উজ্জ্বল তরবারি। (কাসিদা- ই- কা’ব বিন যোহাইর (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু), মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক আলিম শ্রেণির সিলেবাসের অন্তরভুক্ত আরবী সাহিত্য বইয়ের ১৪৮ পৃষ্ঠা)
হাদীস শরীফের আলোকে :
عن جابر بن عبد الله رضى الله عنه قال : قلت يا رسول الله بابى انت وامى اخبرنى عن اول شئ خلق الله تعالى قبل الاشياء ؟ قال يا جابر ان الله تعالى قد خلق قبل الاشياء نورنبيك من نوره فجعل ذالك النور يدور بالقدرة حيث شاء الله تعالى ولم يكن في ذالك الوقت لوح ولا قلم ولا جنة ولا ملك ولا سماء ولا ارض ولا شمس ولا قمر ولا جن ولا انس – فلما اراد الله تعالى ان يخلق الخلق قسم ذالك النور اربعة اجزاء فخلق من الجزء الاول القلم و من الثاني اللوح ومن الثالث العرش ثم قسم الجزء الربع اربعة اجزاء فخلق من الاول حملة العرش ومن الثانى الكرسى ومن الثالث باقى الملائكة ثم قسم الربع اربع اجزاء فخلق من الاول السماوات ومن الثانى الارضين ومن الثالث الجنة والنار————————————— الخ-
অর্থ : হযরত জাবের (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবেদন করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার মা-বাবা আপনার কদম মোবারকে উৎসর্গিত, আপনি দয়া করে বলুন, সকল বস্তুর পূর্বে সর্বপ্রথম আল্লাহ তায়া’লা কোন বস্তুটি সৃষ্টি করেছিলেন? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়’লা সমস্ত কিছুর পূর্বে তোমার নবীর (তোমার) নূর মোবারক তাঁরই নূর মোবারক হতে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর ওই নূর আল্লাহ তায়’লারই মর্জি মুতাবেক তাঁরই কুদরতি শক্তিতে পরিভ্রমণ করতে লাগল। ওই সময় না ছিল বেহেশ্ত-দোযখ, আর ছিলনা আসমান-যমীন, চন্দ্র-সূর্য, মানব ও দানব। এক পর্যায়ে মহান আল্লাহ যখন সৃষ্টিজগত পয়দা করার মনস্থ করেছিলেন, প্রথমেই ওই নূর মোবারককে চারভাগে বিভক্ত করে প্রথম অংশ দিয়ে কলম, দ্বিতীয় অংশ দিয়ে লওহ, তৃতীয় অংশ দিয়ে আরশ, সৃষ্টি করে চুতুর্থাংশকে পুণরায় চারভাগে বিভক্ত করে প্রথমাংশ দিয়ে আরশবহনকারী ফেরেশতাদের দ্বিতীয় অংশ দ্বারা কুরসী, তৃতীয় অংশ দ্বারা অন্যান্য ফেরেশতাদের সৃষ্টি করে চুতুর্থাংশকে আবারও চারভাগে বিভক্ত করে প্রথম ভাগ দিয়ে সপ্ত আসমান, দ্বিতীয় ভাগ দিয়ে সপ্ত যমীন, তৃতীয় ভাগ দিয়ে বেহেশত-দোযখ এবং পরবর্তী ভাগ দিয়ে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সকল বস্তু সৃষ্টি করে। (আল মাওয়াহিবুল লাদুনিয়া ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৭১)।
عن كعب الخبار رضى الله عنه قال : لما الله ان يخلق المخلوقات بسط الارض وقع السماء وقبض قبضة من نوره و قال لها كونى محمدا فصارت عمودا من نوره فعلا حتى انتهى الى حجب العظمة فسجد و قال فى سجوده الحمد لله فقال الله سبحانه و تعالى لهذا خلقتك و سميتك محمد صلى الله عليه و سلم منك ابدا الخلق و بك اختم الرسل-
অর্থ : হযরত কাব আহবার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন যখন সৃষ্টি জগত সৃজন করার ইচ্ছা করলেন তখন মাটিকে সস্প্রসারিত করলেন, আকাশকে উঁচু করলেন এবং আপন নূও হতে এক মুষ্ঠি নূর গ্রহন করলেন। তারপর উক্ত নূরকে নির্দেশ দিলেন’ তুমি মুহাম্ম্দ হয়ে যাও।’ অতএব সে নূও স্তম্ভের ন্যায় উপরের দিকে উঠতে থাকল এবং মহত্বের পর্দা পর্যন্ত পৈাছে সিজদায় পরে বলল,’আলহামদুলিল্লাহ্’ তখন আল্লাহ্ পাকের পক্ষ থেকে ইরশাদ হল,এজন্যই তোমাকে সৃষ্টি করেছি আর তোমার নাম মুহাম্ম্দ রেখেছি। তোমার হতেই সৃষ্টি কাজ শুরু করব এবং তোমাতেই রিসালাতের ধারা সমাপ্ত করব। (সিরাতুল হালাভিয়া ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৫০)।
عن عائشة رضي الله عنها قالت : كنت في الشجر ثوبا لرسول الله صلي عليه و سلم فانطفا المصباح و سقطت الابرة من يدي فدخل علي رسول الله صلي الله عليه و سلم فاضاء من نور و جهه فجدت الابرة-
অর্থ : “হযরত আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি রাত্রে বাতির আলোতে বসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাপড় মোবারক সেলাই করেছিলাম। এমন সময় প্রদীপটি (কোন কারণে) নিভে গেল এবং আমি সুচটি হারিয়ে ফেললাম। এরপরই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্ধকার ঘরে প্রবেশ করলেন। তাঁর চেহারা মোবারকের নূরের জ্যোতিতে আমার অন্ধকার ঘর আলোময় হয়ে গেল এবং আমি (ঐ আলোতেই) আমার হারানো সুচটি খুজে পেলাম”। (ইমাম ইবনে হায়তামী (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) এর আন-নে’মাতুল কোবরা আলার আলম গ্রন্থে ৪১ পৃষ্ঠা)।
اخرج ابن ابي عمر العدني فى مسنده عن ابن عباس ان قريشا كانت نورا بين يدي الله تعالى قبل ان يخلق ادم بالفى عام يسبح ذالك النور و تسبح الملائكة بتسيحه فلما خلق الله ادم القي ذالك النور فى صلب قال رسول الله صل اله عليه و سلم فاهبطنى الله الى الارض فى صلب ادم (عليه السلام) و جعلنى فى صلب نوح عليه السلام و ق ف بى فى صلب ابرهيم عليه السلام ثم لم يزل الله ينقلبى من الصلاب الكريمة و الارحام الطاهؤة حتى اخرجنى من بين ابوى لم يلتقيا على سفاح قط-
অর্থ : হযরত ইবনে আলী ওমর আল-আদানী স্বীয় মুসনাদে হযরত ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণনা করেন, হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন, তখন তাঁকে তাঁর সন্তানদের পরস্পরের মধ্যে মর্যাদার তারতম্যটুকুও দেখাতে লাগলেন। তিনি ( আদম আলাইহিস সালাম ) তাদের মধ্যে শেষপ্রান্তে একটা উজ্জ্বল নূর দেখাতে পেলেন। তখন তিনি বললেন,” হে রব! ইনি কে? ( যাকে সবার মধ্যে প্রজ্জ্বলিত নূর হিসাবে দেখতে পাচ্ছি?) উত্তরে মহান রব্বুল আলামীন ইরশাদ করলেন,” ইনি হলেন তোমার পুত্র-সন্তান হযরত আহমদ মুজ্তবা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি প্রথম, তিনি শেষ, তিনি হবেন আমার দরবারে প্রথম সুপারিশকারী (ক্বিয়ামতের দিনে)। ( আল-খাসাইসুল কুবরা ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৯)
ইমাম হাফেজ আবুল ফযল ক্বাযী আয়ায (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলেন-
و قد سماه الله تعالى فى و سراجا منيرا فقال تعالي قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين و قال تعالى انا ارسلناك شاهدا و مبشيرا و نذيرا و داعيا الى الله باذنه و سراجا منيرا و قال فى غير هذا الموضع انه كان لاظل لشخصه في شمس و لا قمر لانه كان نورا الذباب كان لا يقع على جسده و لا ثيابه-
অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়া’লা কোরআন করীমে তাঁর নাম রেখেছেন নূর ও সিরাজুম্ মুনীর। যেমন তিনি ফরমায়েছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট হতে তোমাদের কাছে নূর ও স্পষ্ট কিতাব এসেছে। আরো ফরমায়াছেন, আমি তো আপনাকে পাঠিয়েছি হাজের ও নাজেররূপে, আল্লাহর অনুমক্রিমে তাঁর দিকে আহবানকারীরূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপ (সিরাজুম মুনীর ) রূপে। নিশ্চয়ই তাঁর ছায়া ছিল না. না সূর্য়ালোকে না চন্দ্রালোকে কারণ তিনি ছিলেন নূর। তাঁর শরীল ও পোশাক মোবারকে মাছি বসত না। (শিফা শরীফ ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ২৪২)।
وعن ابلى هريرة رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه و سلم سائل جبريل عليه السلام فقال يا جبريل كم عمرك من السنين فقال يا رسول الله مست اعلم غير ان فى الحجاب الرابع نجما يطلع في سبعين الف سنة مرة رايته اثنين و سبعين الف مرة فقال يا جبريل و عزة ربى جل جلا له انا ذالك الكوب-
অর্থ : হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা জিব্রাঈল আলায়হিস সালামকে জিজ্ঞেসা করলেন, ওহে জিব্রাঈল! তোমার বয়স কত? উত্তরে জিব্রাঈল বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো সঠিক জানি না। তবে এতটুকু বলতে পারি ( সৃষ্টি জগত সৃষ্টির পূর্বে) আল্লাহ তায়’লা নূরানী আযমতের পর্দা সমূহের চতুর্খ পর্দায় একটি নূরানী তারকা সত্তর হাজার বছর পরপর উদিত হত। আমি আমার জীবনে সেই নূরানী তারকা বাহাত্তর হাজার বার উদিত হতে দেখেছি। অতঃপর নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম ইরশাদ করলেন মহান রাব্বুল আলামীনের ইজ্জতের কসম করে বলছি, সেই অত্যুজ্জ্বল নূরানী তারকা আমিই ছিলাম। (সীরাতে হালাভীয়া পৃষ্ঠা ৪৯, তাফসীরে রুহুল বয়ান পৃষ্ঠা ৫৪৩)
لم يكن له صلى الله عليه و سلم ظل في شمس و لا قمر لانه كان نورا-
অর্থ : “সূর্য চন্দ্রের আলোতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দেহ মোবারকের ছায়া পড়তোনা। কেননা, তিনি ছিলেন আপদমস্তক নূর”। (যুরকানী শরীফ ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ২২০)।
এ ছাড়া আরো অনেক হাদীস শরীফ গ্র্েরন্থর মধ্যে আছে যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের তৈরি তা নিম্নরূপ :-
১। মিশকাত শরীফ পৃষ্ঠা ৫১৩, ২৪ এর ১০নং হাশিয়া, ৫১১ এর ৬নং হাশিয়া, তিরমিজি শরীফ ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৭, মাওয়াহিবে লাদুনিয়া পৃষ্ঠা ৪৫,শরহে সুন্নাহ ১০ম খন্ড, পৃষ্ঠা ২০৭, মিরকাত ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ১৪৬,১৬৬,১৯৪।
তিরমিজি শরীফ ২য় খন্ড, প- ৩৭, মাজমুওয়ায়ে ফাতাওয়ার ২য় খন্ড, পৃ- ২৮৬, ১৮।
নশরুততীব পৃ- ৫, কৃতঃ আশরাফ আলী থানবী, ১৯।
এমদাদুছ ছুলূক পৃষ্ঠা ২০১, কৃতঃ রশিদ আহমেদ গাংগুহী। ২০।
শুকরে নিয়ামত কৃতঃ কাসেম নানুতুবী, গাওহারে সিরাজী পৃষ্ঠা ৬৯, কৃত : সিরাজুল ইসলাম।
হে আল্লাহ ! তুমি সকলকে হুববে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও দীদারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নসীব করো। ওয়া সাল্লাল্লাহু আলা খাইরি খালাক্বহী ওয়া নূরে যাতিহী ওয়া জীনাতি ফারশিহী সাইয়েদিনা ওয়া মাওলানা মোহাম্মদিও ওয়া আলা আলিহী ওয়া আসহাবিহী আজমাঈন। আমীন